পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছেন চীনা মুসলিমরা!

চীনে ক্রমশ পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছেন মুসলিমরা। কারণ সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া কিছু নির্দেশিকা তেমনই ইঙ্গিত করছে৷ চীনের স্কাইলাইনে এখনও জ্বলজ্বল করছে ছোট মক্কা মসজিদের সবুজ ইমারত৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ভয় যাচ্ছে না চীনা মুসলিমদের৷

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির হাত ধরে খাঁড়া নেমে আসতে পারে তাদের ওপর, এমনই আশঙ্কা করছেন তারা৷ ইতিমধ্যে ১৬ রকমের নির্দেশিকা ও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে৷ পশ্চিম চীনের মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং-এর প্রাদেশিক সরকারের হুকুম জারি হয়েছে যা ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করার জন্যই তৈরি বলে অভিযোগ স্থানীয় মুসলিমদের৷

চীনের জিংজিয়াং প্রদেশে বেশির ভাগই মুসলমান। নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিভিন্ন সময় সরব হন এ প্রদেশের বাসিন্দারা। কখনও কখনও সেই দাবি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয় চীন সরকারকে৷ সূত্রের খবর, তাই আরও কড়া হতে চাইছে সরকার।

জানা গিয়েছে, চীনের বিভিন্ন মসজিদে আজানের সময় আর মাইক বা লাউড স্পিকারের ব্যবহার করা যাবে না৷ কারণ তা থেকে নাকি শব্দদূষণ ছড়ায়৷ এছাড়াও মসজিদে দেশের পতাকা লাগিয়ে রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই ৩৫৫টি মসজিদ থেকে লাউড স্পিকার সরিয়ে ফেলেছে প্রশাসন৷

এর আগে, মুসলিম শিশুদের কিছু নামের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় জিনজিয়াং প্রদেশে। বলা হয় সন্তানের এমন কোনো নাম রাখা যাবে না, যা শুনে মনে হতে পারে সে ইসলাম ধর্মের অনুসারী। চীন সরকার দাবি করে, চীনে উগ্রপন্থা রুখতেই এমন সিদ্ধান্ত।

প্রাদেশিক সরকার জানায় ‘ইসলাম’, ‘কোরান’, ‘মক্কা’, ‘জেহাদ’, ‘ইমাম’, ‘সাদ্দাম’, ‘হজ’, ‘মদিনা’র মতো কিছু নামে চীনের ওই প্রদেশে রাখা যাবে না। আরও বলা হয়, এই নামগুলো রাখা হলে শিশুরা প্রায় সব রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, শিক্ষার সুযোগ, সামাজিক সেবা থেকেও তারা বঞ্চিত হবে বলে জানানো হয়েছে।

শুধু নাম রাখার ক্ষেত্রেই নয়, এর আগে চীনে লম্বা দাড়ি রাখা নিয়েও কিছুদিন আগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনের অন্যতম সংখ্যালঘু হলো মুসলমান সম্প্রদায়। দেশটিতে মোট জনগোষ্ঠীর ২ শতাংশেরও কম মুসলমান বসবাস করেন৷ সেখানে দুই রকম মুসলমান আছেন। ‘হুই’ও ‘উইঘুর’। উইঘুর মুসলমানদের বাস জিনজিয়াং অঞ্চলে। চীনের বৃহত্তম এ প্রদেশটিতে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। চীনের মোট আয়তনের এক ষষ্ঠাংশজুড়ে জিনজিয়াং। যার আয়তন বাংলাদেশের আয়তনের ১২ গুণ! সূত্র: ওয়েবসাইট